নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে রাব্বী (২২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।রোববার (৯ জুন) রাত ১০টার দিকে মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিস গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাব্বী হাবিবপুর গ্রামের সানাউল্লাহ বেপারীর বাড়ির ভাড়াটিয়া আক্কাস আলীর ছেলে। এ ঘটনায় শাহ আলম নামের আরও এক যুবক আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী জানান ওরা একই গ্রুপের মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সবাই কে আইনের আওতায় আনা হোক এবং শাস্তির দাবি করেন এলাকাবাসী। সমাজের মাদক মুক্ত সন্ত্রাস মুক্ত হোক।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়ি মজলিস এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন অপরাধীদের আখড়া হিসেবে পরিচিত। সেখানে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড সংঘটিত হয়ে থাকে। রোববার রাত ১০টার দিকে শাহ আলম নামের পুলিশের সোর্স নিহত রাব্বীকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ি মজলিস এলাকায়। পরে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী ও চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী অন্তুরের নেতৃত্বে মিন্টুসহ ৫-৬ জনের একটি দল ইয়াসিন, রাব্বী ও শাহ আলমের ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা আহতদেরকে সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাব্বীকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়াও শাহ আলমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহতের মা শাহানারা বেগম বলেন, পুলিশের সোর্স শাহ আলম তার ছেলে রাব্বীকে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে তাদের জানানো হয়।হাসপাতালে এসে রাব্বীর লাশ দেখতে পান তারা। তার মায়ের দাবি পরিকল্পিতভাবে মাদক ব্যবসায়ীরা তার ছেলেকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আহত পুলিশের সোর্স শাহ আলম বলেন, নিহত রাব্বী ও সে একে অপরের বন্ধু। রাতে দুজন মিলে বাড়ি মজলিস এলাকায় গেলে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত সন্ত্রাসী গিট্টু হৃদয়ের সহযোগী অন্তুরের নেতৃত্বে মিন্টুসহ কয়েকজন তাদের কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর রাব্বী মারা যায়।একটি সূত্র জানায়, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্তর ও রাব্বীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে দ্বন্ধ চলছে। গত কয়েক বছর ধরে রাব্বী মাদক ব্যবসায়ী অন্তুরের সাথে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে, আঝাম বাড়ি এলাকায় চিড়িয়ার মেইলের সামনে গুজা আক্তার চায়ের দোকানে টাকা ভাগবাটোয়ারা হতো, ও গুজা আক্তার, রাব্বী অন্তর, ইয়াসিন, মাদক বেচাকেনার সময় ১০ হাজার টাকা বকেয়া করে। পাওনা টাকা পরিশোধ করতে তালবাহানা করলে আফিয়া সিএমজি পাম্পে তাকে পেয়ে কুপিয়ে আহত করে। এ দ্বন্দ্বে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহসিন বলেন, হত্যাকান্ডের পর নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। হত্যাকান্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।