বাজারের হিসাব মেলাতে ভোক্তারা যখন ব্যয় সংকোচন নীতিতে স্বস্তির খোঁজে, তখন বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঘোষণা এলো, দাম বাড়ছে ভোজ্যতেলের। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৪ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮১৮ টাকা। আগে এটির দাম ছিল ৮০০ টাকা। আর পাম অয়েলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৫ টাকা। তবে ২ টাকা কমেছে খোলা সয়াবিন তেলের দাম। বিক্রি হবে ১৪৭ টাকায়।
দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এলো- এমন অভিব্যক্তি নিরুপায় ভোক্তাদের। তারা বলেন, এমনিতেই দাম বেশি সব পণ্যের। তার ওপর আবার বাড়ানো হলো সয়াবিন তেলের দাম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সংসার চালানোই দায়।
এদিকে, ঘোষণার আগেই বাড়তি দামে সয়াবিন তেল বেচাকেনা শুরু হয়েছে বলে জানালেন কারওয়ান বাজারের বিভিন্ন পর্যায়ের বিক্রেতারা। তারা বলেন, ডিলার পর্যায় থেকে ঘোষণার আগেই দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে বাজারেও বেড়েছে দাম।
তবে হঠাৎ করে কেনো বাড়ানো হলো ভোজ্যতেলের দাম? প্রথমত, গত ফেব্রুয়ারিতে ভোজ্যতেলের আমদানি ও ব্যবসায়িক বা ভোক্তা পর্যায়ে আরোপিত ৫ শতাংশ করে ভ্যাট অব্যহতি দিয়েছিলো সরকার। সেই সুবিধায় লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে গেল পহেলা মার্চ থেকে নতুন দাম বাজারে কার্যকর করেন ব্যবসায়ীরা। সেই ভ্যাট অব্যহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৫ এপ্রিল। স্বাভাবিকভাবেই তেলের দামের সঙ্গে যোগ হয়েছে ওই ১০ শতাংশ ভ্যাট।
এছাড়া বিশ্ববাজার পরিস্থিতিও দাম বাড়ানোর পক্ষে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য, ফেব্রুয়ারির চেয়ে মার্চে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম ৮ শতাংশ বেড়ে এক বছরের মধ্যে দাঁড়িয়েছে সর্বোচ্চে। এই হিসাব আমলে নিয়েই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে সরকার।
দাম বাড়ানো প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল লিটারে ১০ টাকা, কিন্তু বাড়লো ৪ টাকা। এতে কী লোকসান গুনতে হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলা হচ্ছে, আগের কেনা কমমূল্যের তেলের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্তত ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না ব্যবসায়ীদের। টিকে গ্রুপের অর্থ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মো. শফিউল আতহার বলেন, বিশ্ববাজারে মার্চের তুলনায় প্রতিটনে দাম বাড়ছে ১০০ ডলার। তবে সপ্তাহখানেক ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। ভ্যাট অব্যাহতি তুলে দেয়ার হিসাব আমলে নিলে, দাম আরও বাড়ার কথা।