ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজারে কুকুর গরু কামড়েছে অভিযোগে “রহিমের গোস্তের দোকান” নামক এক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ১শত ২০ কেজি গোমাংস বিনষ্ট করাসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ভোক্তা অধিকার। এ সময়ে মূল অভিযোগকারী বীরদর্পে সবুজ কসাই মাংস বিক্রেতাকে বলেন “কেমন দেখাইলাম”!
মঙ্গলবার(৪ মার্চ) দুপুরে প্রানী সম্পদ, ভোক্তা অধিকার ও কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
কুকুরে কামরানো গরুর মাংসের কোন আলামত জব্দ বা ল্যাব টেষ্ট অথবা ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়ে জীবাণু আছে কি না কোনো রকম পদক্ষেপ গ্রহণ না করেই ঐ দোকানের প্রতিপক্ষ কয়েকজনের মতামতের ভিত্তিতে গোমাংস বিনষ্ট ও জরিমানা আদায়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
“রহিমের গোস্তের দোকান” এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ আব্দুর রহিম জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ৫/৭ জন তার দোকানে গিয়ে চাঁদাদাবী করে, সে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বলে তুই কুকুরে কামরানো গরুর মাংস বিক্রি করছিস মজা দেখাচ্ছি। একথা বলে ফোন করে ভোক্তা অধিকারকে তাদের দোকানে নিয়ে আসে। রহিম বলে, তার অনুপস্থিতিতেই প্রভাবশালী কয়েকজনের কথায় প্রায় ১শত ২০ কেজি গোস্ত বিনষ্ট এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে আদায় করা হয়। ঠুনকো তথ্য বিভ্রাট অজুহাতে আমারমত নিরীহ মানুষদের জন্য হাট বাজারে সুনামের সাথে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে গেছে।
স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম জানান, ভোক্তা অধিকারের লোকজন এসে গোস্ত বিনষ্ট করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করলে রহিম ও তার লোকজন দোকানে না থাকায় তার পক্ষে আমি স্বাক্ষর করে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছি।
এবিষয়ে প্রানী সম্পদের ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ সোলাইমানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গোস্ত জব্দ করার সুযোগ নাই, ল্যাব টেস্ট করা হয়নি, উপস্থিত স্থানীয়দের মতামতের উপর ভিত্তি করে খাওয়ার অনুপযোগী হিসেবে গোস্ত মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে।
ভোক্তা অধিকারের এডি জানান, যথাযথ নিয়ম মেনেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যিনি জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি দোষ স্বীকার করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের ব্যবসায়ী একাধিক সুত্র জানায়, সবুজ কসাইয়ের ব্যবসায়ী প্রতিহিংসা ও তার ইন্ধনে একটি প্রভাবশালী মহল ভুল তথ্য দিয়ে ভোক্তা অধিকারকে ব্যবহার করেছে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ভোক্তা অধিকার অভিযান খুবই প্রয়োজনীয় তবে ভোক্তা অধিকার যেন যথাযথ নিয়ম মেনে অভিযান পরিচালনা করে এবং দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করেন। এক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকারের আরও সচেতন হতে হবে যেন তাদের ভুল তথ্য দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থে কোন এজেন্ডার বাস্তবায়ন না হয়।