অর্থ আত্মসাৎ, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশপাশি আত্মসাতকৃত অর্থ এক মাসের মধ্যে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এ সময় সভায় মাসুম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
রবিবার সকালে মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাসেম আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সভাপতি আবুল কাসেম আজাদ জানান, বিভিন্ন খাত থেকে আসা প্রেসক্লাবের অনুদানের ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদ। যদিও সাধারণ সম্পাদক অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
সেইসঙ্গে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ভুয়া রেজুলেশন ও গায়েবি বিল ভাউচার তৈরি করেন তিনি। পরে বিষয়টি তদন্তে ক্লাবের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে অর্থ আত্মসাৎ ও ধামাচাপা দিতে ভুয়া রেজুলেশন ও গায়েবি বিল ভাউচারের বিষয়টি ধরা পড়ে। তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ক্লাবের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদকে তাঁর পদ থেকে অপসারণ ও ক্লাবের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেইসাথে আত্মসাতকৃত ৫ লাখ টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে মওকুফ করে দেওয়া হয়।
তাৎক্ষণিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাকি ৪ লাখ টাকা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রেসক্লাবের ব্যাংক একাউন্টে জমা দিতে বলা হয়। এদিকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক তালুকদার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মানিক তালুকদার জানান, মাসুম আহমেদ নিজ সংগঠনের অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম করে প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন। এতে সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি আর কেউ যাতে অনিয়ম না করে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
বহিষ্কারের বিষয়ে মাসুম আহমেদ বলেন, এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নরোত্তম রায় বলেন, অনিয়ম করে কেউ পার পায় না।
এটিই তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। উল্লেখ্য- অর্থ আত্মসাৎ, নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৯ এপ্রিল ক্লাবের সাধারণ সভায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ২৯ এপ্রিল তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্তে অর্থ আত্মসাতসহ ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী গত শুক্রবার ক্লাবের সাধারণ সভায় মাসুম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ও প্রেসক্লাবের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।