মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি’র নেতা ও ভোটারদের অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগের বিজয়ী নেতাকর্মীরা ব্যপক উচ্ছ্বসিত হয়েছে। সোমবার ১০ জুন ২০২৪ তারিখে নির্বাচনত্তর এ প্রতিবেদক সরেজমিনে উপজেলার একাধিক নেতাকর্মী ও ভোটারদের সাথে আলাপকালে নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মী ও ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে সরব উচ্ছ্বসিত আলোচনা করতে দেখা যায়।
শিবলী সাদিক খানঃ
মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি’র নেতা ও ভোটারদের অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগের বিজয়ী নেতাকর্মীরা ব্যপক উচ্ছ্বসিত হয়েছে। সোমবার ১০ জুন ২০২৪ তারিখে নির্বাচনত্তর এ প্রতিবেদক সরেজমিনে উপজেলার একাধিক নেতাকর্মী ও ভোটারদের সাথে আলাপকালে নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মী ও ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে সরব উচ্ছ্বসিত আলোচনা করতে দেখা যায়।
মুক্তাগাছায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গেল ২১ মে উপজেলা নির্বাচনের ২য় ধাপে মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে পাঁচ ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল নেতাকর্মীরা। নির্বাচনি প্রচারে দলের শীর্ষ নেতারা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অংশ নিলেও বিপাকে পড়েছিল সাধারণ কর্মীরা। সব প্রার্থীই আওয়ামী লীগের হওয়ায় কার পক্ষে সমর্থন দিবেন এ নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিলেন তারা।
জানা যায়, উপজেলা নির্বাচনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালেদের অনুসারীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি দেবাশীষ যোস বাপ্পী (হেলিকপ্টার) এবং পৌর আ.লীগের সভাপতি আরব আলীর (দোয়াত-কলম) পক্ষে নির্বাচন করেছেন।
বর্তমান সংসদ-সদস্য নজরুল ইসলামের অনুসারীরা উপজেলা আ.লীগের সাবেক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই আকন্দের (মোটরসাইকেল) পক্ষে প্রচারে নেমেছিলেন। অন্য দুই প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (ঘোড়া) ও ময়মনসিংহ মহানগর আ.লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মুহাম্মদ রেজাউল করিমও (আনারস) নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করেছিলেন।
নির্বাচনে ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
এছাড়া সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দের বড় ভোট ব্যাংক থাকলেও তার ঘনিষ্ঠ দেবাশীষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় ওই ভোট ভাগ হয়ে যাবে এমনটা চিন্তা করে বিএনপি’র সমর্থন নিতে কৌশল গ্রহণ করেছিলেন, তিনি সফলও হযেছেন।
এসময় মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মামলা হামলা হয়রানি থেকে কিছুটা রেহাই পেতে সরকার দলীয় অনুকম্পা নিতে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দের পক্ষে অনেকটা প্রকাশ্যে ও গোপনে নিজ দলের ভোটারদের মটরসাইকেল প্রতিকে ভোট দিতে প্রচার-প্রচারণা করায় ভোটার উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়।
দায়িত্বশীল বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। যে সকল পদ পদবী নেতৃবৃন্দ যে ভোট কেন্দ্র শুলোতে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে মোঃ হাবিবুর রহমান (রতন), অহব্বায়ক, উপজেলা বিএনপি, মুক্তাগাছা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিজয়ী নাজমুন নাহার দিলু’র বিয়াই (সম্পর্কে মেয়ের শাশুরী)মোঃ কামরুজ্জামান (লেবু), সাবেক চেয়ারম্যান ৭নং ঘোগা ইউপি, বর্তমানে যুগ্ম আহ্বায়ক (১), উপজেলা বিএনপি। ৭নং ঘোগা ও ৮নং দাঁওগাও নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন। এ.কে.এম জাহাঙ্গীর হাসান, সাবেক চেয়ারম্যান, ৪নং কুমারগাতা ইউপি, যুগ্ম আহবায়ক (২), উপজেলা বিএনপি ৪নং কুমারগাতা নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বাবুল, সাবেক চেয়ারম্যান, ২নং বড়গ্রাম ইউপি, বড়গ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক। মোঃ দেলোয়ার হোসেন (বকুল) সভাপতি, ৩নং তারাটি ইউনিয়ন বিএনপি। মোঃ ইউসুফ, সাবেক এপিএস, জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী বর্তমানে জাকির হোসেন বাবলু’র এপিএস, মোঃ হাফিজুর রহমান খান (মঞ্জু), সাবেক চেয়ারম্যান, ৫নং বাঁশাটি ইউপি ও সাধারণ সম্পাদক ইউনিয়ন বিএনপি, মোঃ শহিদুল ইসলাম (শহীদ), সাবেক পৌর মেয়র, সভাপতি, পৌর বিএনপি, মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পৌর বিএনপি, মোঃ শওকত রানা (রিপন), সহ-সভাপতি পৌর বিএনপি, মোঃ হাবিবুর রহমান (হবি) ও টুটুল, সাংগঠনিক সম্পাদক, পৌর, বিএনপি নিজ নিজ এলাকায় প্রকাশ্যে নির্বাচনে ভোট দান কাজে দায়িত্ব পালন করেছেন বলে চেয়ারম্যান দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী আরব আলী, ভাইস চেয়ারম্যান মাইক প্রতীকের প্রার্থী মোঃ মোঃ মাহমুদুল হাসান মুকুল, পৌর কাউন্সিলর মির্জা আবুল কালামসহ একাধিক নেতাকর্মীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পক্ষে বিএনপি নেতা ও ভোটারদের ভোটে অংশগ্রহণ ছিল দৃশ্যমান তাদের উপস্থিতিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আব্দুল হাই আকন্দ মোটরসাইকেল প্রতীকে ৬৭২৯০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আরব আলী দোয়াত কলম প্রতীকে ১৮৭৩৮ ভোট পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের ৫ জন প্রার্থীর ভোটারদের ভোট ভাগাভাগির কারনেই বিএনপির অংশের ভোট কাজে লাগাতে পেরেছেন বিজয়ী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই আকন্দ এমনটাই মনে করছেন মুক্তাগাছা উপজেলার অধিকাংশ রাজনৈতিক মহল।