নিজস্ব প্রতিবেদক
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলার সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এর এপিএস আলহাজ্ব আবু সাঈদ । তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ছিল দোয়াত কলম। এই উপজেলায় ৫জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে আলহাজ্ব আবু সাঈদ পেয়েছেন ৪৪হাজার ৫৩০ ভোট।
মঙ্গলবার (২১ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার ইফতেখার ইউনুস এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
দায়িত্বরতরা জানান, ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় এগারটি ইউনিয়নে ১০৩টি কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ১৫হাজার ৮০৭ । এর মধ্যে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১০৭০২৬ এক লক্ষ সাত হাজার ২৬ ভোট। তার মধ্যে ৩৮৩৬ তিন হাজার ৮শত ৩৬ ভোট বাতিল বলে গণ্য হয়ে বৈধ ভোটের সংখ্যা দাড়ায় ১০৩১৯০ এক লক্ষ তিন হাজার একশত ৯০ভোট। নির্বাচনে ময়মনসিংহ সদর চেয়ারম্যান পদটি ছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়েছেন সাতজন। আর নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়েছেন দুইজন।
উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার জানান, চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীকে আলহাজ্ব আবু সাঈদ পেয়েছেন ৪৪হাজার ৫৩০ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীক নিয়ে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ হোসাইন পেয়েছেন ৪০ হাজার ৬৫১ভোট। বেসরকারি ফলাফলে আলহাজ্ব আবু সাঈদ বিজয়ী হয়েছেন।
বিজয়ী ঘোষণার পর উপজেলার বিভিন্ন সড়কে বিজয় মিছিল ও উল্লাস করে আবু সাঈদ এর অনুসারী, নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। আবার কেউ প্রিয় নেতাকে গলায় মালা পড়িয়ে ও ফুলের তোড়া ধড়িয়ে দিয়ে অভিনন্দন জানান।
বিজয়-পরবর্তী অনুভূতি জানিয়ে আলহাজ্ব আবু সাঈদ বলেন, সদর উপজেলাবাসী ও দোয়াত কলম প্রতীকের সমর্থকদের দেখভাল করার দায়িত্ব আমার কাঁধে পড়ল।’ তাঁর সব সমর্থক, ভোটার সর্বোপরি কর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তির মধ্য দিয়ে সদর উপজেলা বাসীকে নিয়ে আমরা ভালো থাকতে চাই এবং এই উপজেলার সব নাগরিককে ভালো রাখার চেষ্টা করব।’
এদিকে দিনভর বিভিন্ন কেন্দ্রে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে প্রশাসনের নজরধারীতার কঠোরতায় কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর শোনা যায়নি।
আলহাজ্ব আবু সাঈদ বিজয়ী হওয়ার কারণ হিসেবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকাসহ ময়মনসিংহের আওয়ামী রাজনীতির সিংহপুরুষ,সাবেক ধর্মমন্ত্রী মরহুম অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের এপিএস হিসাবে বিগত দিনে নেতাকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক থাকার কারণে উপজেলার সব এলাকার জনগণের সঙ্গে তাঁর চমৎকার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া গত ২০১৯ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলার ৫নং সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত হয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় থেকে ইউপি চেয়ারম্যান হয়েও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক ও ধর্মীয় অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। হিন্দু-মুসলিম সকলের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে সবার চেয়ে এগিয়ে তিনি।
পাশাপাশি গত রমজানের পুরো মাস উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, ক্লাব ও ভবঘুরেদের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তাঁরও রয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি শক্ত অবস্থান।
উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যাঁরা নির্বাচন করছেন, তাঁদের মধ্যে সাঈদ ভাইকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে সাধারণ মানুষ। জনগণ সেই ভালোবাসা থেকে ভোট দিয়ে তাঁকে বিজয়ী করেছেন।’
সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য মতে-আলহাজ্ব আবু সাঈদ একজন দক্ষ ও মেধাবী রাজনৈতিক নেতা,যিনি তার মেধা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অতীতের ন্যায় আগামী দিনেও সদর উপজেলার উন্নয়নে নিজের মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে উপজেলাকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ দেশের অন্তর্ভুক্ত একটি আধুনিক ও উন্নত এলাকা উপহার দিতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে টিয়াপাখি প্রতীক নিয়ে ৩১৯১৭ একত্রিত হাজার নয় শত সতেরো ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন
ওয়াহিদুজ্জামান মিলন। নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী নাদিম মাহমুদ বই প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৩০৭৬ তেইশ হাজার ছিয়াত্তর ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাহমিনা আক্তার কাজল হাঁস প্রতিক নিয়ে ৬৪ হাজার ৫শত ৮৫ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা হক কলি কলস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৪৩৯২ চৌত্রিশ হাজার তিনশত ৯২ ভোট।