ভারতের এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ৬৪ কোটি ২ লাখ ভোটার যা বিশ্বরেকর্ড। এর মধ্যে ৩১ কোটি ২ লাখ মহিলা ভোটার ছিলেন। দেশ মহিলাদের জন্য গর্বিত। ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার এ কথা বলেছেন।
লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হবে মঙ্গলবার। এর আগে আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভোট গণনায় কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। ভোটগণনা খুবই বলিষ্ঠ একটি প্রক্রিয়া। দেশে মোট সাড়ে ১০ লাখ বুথ রয়েছে। ৩০-৩৫ লাখ পোলিং এজেন্ট থাকবেন বাইরে। এছাড়া নজরদারি দল থাকবেন, গণনা অফিসাররা থাকবেন। কোনো ভুল হতেই পারে না। সিসি ক্যামেরা থাকবে। মানুষের ভুল হতেই পারে। কিন্তু ভোটগণনায় কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। বিভিন্ন দল ভোটগণনা নিয়ে যে দাবি করেছিলেন, সব মেনে নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের সাফল্যের খতিয়ান জানিয়ে বেশ কয়েকটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তিনি। জানান, সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ভারতীয় ভোটদানের সংখ্যা জি-৭ সদস্য দেশগুলোর মোট ভোটারদের দেড়গুণ বেশি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের ভোটারদের থেকেও এই সংখ্যা আড়াই গুণ বেশি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের যেসব অভিযোগ পেয়েছি তার ৯০ শতাংশের বেশি আমরা খতিয়ে দেখেছি। অনেক বড় নেতাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে ও গাড়িতে করে টাকা যাচ্ছে—এমন দৃশ্য এবার দেখা যায়নি। নেতাদের স্বজনদের ভোটের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। মানুষ এগিয়ে এসে ভোট দিয়েছেন। ২৩টি দেশ থেকে ৭৫ জন এসে ভারতের অনেক বুথ ঘুরে দেখে দেখেছেন।
অতীতে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা কী রকম হিংসা দেখতাম আপনাদের মনে আছে। কিন্তু এ বছর সে রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঝাড়খণ্ড, মণিপুর, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ, কাশ্মীরসহ সারা দেশে সে রকম কোনো হিংসার ঘটনা ঘটেনি।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে রাজীব কুমার বলেন, আমরা আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী যে, সেভাবে হিংসা হবে না। তবে যদি হয়, তা মাথায় রেখে কয়েকটি রাজ্যে সিআরপিএফ থাকবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে, রাজ্য সরকার ও সিআরপিএফ ভোট পরবর্তী হিংসা হতে দেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিরোধী নেতাদের কাছ থেকে ভোট প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগের প্রমাণ চান। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই নির্বাচনে ৬৮ হাজারেরও বেশি মনিটরিং টিম এবং দেড় কোটি পোলিং ও নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত ছিল।