পাসপোর্ট অফিস থেকেই ফাঁস হচ্ছে আবেদনকারীদের তথ্য। যদিও পাসপোর্ট অফিসের কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে জানায়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। ডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তিগত সব তথ্য দিয়ে অনলাইন ফরম পূরণ করে সেটির কপি নিয়ে অন্যান্য সব কাগজপত্রসহ পাসপোর্ট অফিসে জমা দেন আবেদনকারীরা।
এদের অনেকেই পাসপোর্ট অফিসের আশপাশের কম্পিউটারের দোকান থেকে ফরম পূরণ করেন। আবার অনেকে নিজে বা তার নিজ নিজ এলাকা থেকে ফরম পূরণ করে আনলেও পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার, পিয়ন, দালালসহ বিভিন্ন লোকজনের সহযোগিতা নেন। পাসপোর্ট আবেদনের পরে সবার কাছেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফোন যায়। অনেককেই পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) ডাকা হয় পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য। আর এই ভেরিফিকেশনের নামে ফাঁদ পেতে দীর্ঘদিন ধরে টাকা হাতিয়ে নিত একটি চক্র।
এই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতারের পর ডিবি বলছে, আবেদনকারীদের তথ্য চক্রের সদস্যরা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আনসার এমনকি কম্পিউটারের দোকান থেকেও নিত। পরে নিজেদের এসবির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ভেরিফিকেশনের নামে টাকা আত্মসাৎ করত। এই চক্রের গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কাজী মো. বেলাল হোসেন, জসিম উদ্দিন, আল-আমিন গাজী, হাসান আহম্মেদ, সোহাগ আলম, হোসাইন মোল্লা, নুরুজ্জামান মিয়া, মামুনুর রহমান ও রাসেল ইসলাম। পুলিশের এসবির পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন শাখা থেকে সবুজবাগ থানায় দায়ের করা একটি মামলার সূত্র ধরে এই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রতারক চক্র পাসপোর্ট অফিসে কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর, পিয়ন ও আনসার সদস্যের যোগসাজশে পাসপোর্ট অফিস থেকে তথ্য নিত। পরে পাসপোর্ট আবেদনকারীদের ডেলিভারি স্লিপে এবং আবেদন ফরমে দেওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করে নিজেদের এসবি অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রথমে আবেদনকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (এনআইডি, বিদ্যুৎ বিলের কপি) হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে বলে। পরে কৌশলে বিভিন্ন আবেদনকারীর তথ্যে সমস্যা আছে জানিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।