পাগলা মসজিদে জমা হওয়া ২৮ বস্তা টাকা গণনা চলছে। আজ শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদেছবি: তাফসিলুল আজিজ
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ৯টি দানসিন্দুক খুলে এবার মিলেছে রেকর্ডসংখ্যক ২৮ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা। আজ শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সিন্দুক খুলে টাকাপয়সা বস্তাভর্তি করা হয়। এখন চলছে গণনার কাজ। এবার ৩ মাস ২৬ দিন পর দানসিন্দুক খোলা হলো।
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটিতে লোহার ৯টি দানসিন্দুক আছে। প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপর এই সিন্দুক খোলা হয়। এর আগে গত ২০ এপ্রিল খোলা হয়েছিল দানসিন্দুকগুলো। তখন ২৭টি বস্তার মধ্যে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া যায়, যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল।
পাগলা মসজিদ কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করছেন এই মসজিদে। যাঁরা দান করতে আসেন, তাঁরা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাঁদের আশা পূরণ হয়েছে। আর এ কারণেই দিন দিন দানের পরিমাণ বাড়ছে। এবার আরও বেশি টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। দুটি মাদ্রাসার প্রায় আড়াই শ শিক্ষার্থী, ব্যাংকের ৭০ জন কর্মী, মসজিদ কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় সাড়ে তিন শ জন টাকা গণনার কাজ করছেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের নেতৃত্বে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং দানসিন্দুক খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমতের উপস্থিতিতে আজ সকাল সাড়ে ৭টায় ৯টি দানসিন্দুক খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। প্রথমে টাকাগুলো সিন্ধুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢেলে গণনা শুরু করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, সকাল থেকে টাকার সিন্দুক খোলা, বস্তায় ভরে এনে গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত সব টাকা নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তার কাজে তিনিসহ পুলিশ সদস্যরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া গণনার দিন ছাড়াও বাকি দিনগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন সিন্দুক নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন।