আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। চাঁদা দাবি, ইটভাটা ভাংচুর, হাইওয়ে গাড়ী আটক করে চাঁদাবাজি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি, মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায়সহ তারা নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছেন। বিএনপি এক নেতার নেতৃত্বে ইটভাটা,বালুমহাল,থানায় দালালিসহ ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
এবিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় এক ভুক্তভোগী । যার অনুলিপি দিয়েছেন পুলিশের ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ত্রিশাল ও ময়মনসিংহ সেনা ক্যাম্প, ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ত্রিশাল উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা ক্যাম্প কর্মকর্তার কাছেও।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দিন, বিএনপির নেতা হাসমত ডাক্তার ও শহীদুল ইসলামসহ ১২/১৩ জনের একটি গ্রুপ চাঁদাবাজি শুরু করেছে।
তারা ময়মনসিংহ জেলা বিএনপি নেতা ডাঃ লিটনের অনুসারী বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ডাক্তার লিটনের এক অনুসারী নেতার সাথে আওয়ামী লীগের লোকজনও আছেন চাঁদাবাজিতে। সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা আদায় করছে বিএনপির লোকজন। তাদের কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, দখল ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন কানিহারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দিন,হাসমত ডাক্তার ও শহীদুল ইসলামসহ ১২/১৩জন।
এমনও শোনা যাচ্ছে, ইউনিয়ন পরিষদের কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রেও হস্তক্ষেপ করছেন তারা। তাদের কথায় বয়স্কভাতার কার্ড, নলকূপ বিতরণ করতে হবে বলে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বলছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য সম্প্রতি পরিষদে ৮টি নলকূপ বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে ৪টি নিয়ে গেছেন বিএনপি নেতারা।
ত্রিশালের কানিহারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দিনের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ত্রিশাল বিএনপির অফিসে আছি। এখানে আসুন। আমার নেতার সাথে কথা না বলে নিউজ করলে ঝামেলা হবে। ত্রিশাল এখন আমরা চালাই। আমরা যেমনে চালাবো তেমনেই চলবে। পুলিশও আমাদের বাইরে নয়।
স্থানীয়রা জানান, শুধু বাজার ও জমিদখল করেই ক্ষান্ত হননি, এলাকার সাধারণ মানুষের ওপরও অত্যাচার,হুমকি ও হামলায় করছেন নিজাম উদ্দিনসহ তার বাহিনীরা।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনও চাঁদাবাজদের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নেই। আপনাদের এলাকায় কেউ যদি বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করে তাহলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিন।
ত্রিশাল থানার ওসি মনসুর আহমেদ জানান, যারা চাঁদাবাজি করবে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেই গ্রেফতার করা হবে। আমি ওসি থাকা অবস্থায় কোন অন্যায় করার সুযোগ নেই। ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল আহমেদ বলেন, ইতিমধ্যে অসংখ্য অভিযোগ জমা হয়েছে। এগুলো সেনাবাহিনী ক্যাম্পে আমি পাঠিয়েছি। যারা চাঁদাবাজি করবে তাদের ধরে পুলিশে দিন।