ময়মনসিংহে জাকিরের টক-মিষ্টি জিলাপি কিনতে মানুষের ভিড়, পবিত্র রমজানে ময়মনসিংহের ভোজন প্রিয়দের কাছে ইফতার আইটেমের অন্যতম উপকরণ নগরীর জিলা স্কুল মোড় এলাকার জাকিরের টক-মিষ্টি জিলাপি। দিন দিন এই জিলাপির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় চলতি রমজানে দৈনিক এক থেকে দেড় লাখ টাকার জিলাপি বিক্রি হয় এই দোকানে।
সম্প্রতি নগরীর জিলা স্কুল মোড়ের জাকির হোসেনের ‘মেহেরবান’ হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, টক-মিষ্টি জিলাপি কিনতে মানুষের ভিড় জমেছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা এই জিলাপির স্বাদ নিতে এসেছেন। অথচ তখন অন্যান্য ইফতারের দোকানগুলো মাত্র সাজিয়ে বসতে শুরু করেছে।
জানা যায়, জাকির হোসেন জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বালিয়ান ইউনিয়নের তেলিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সবার ছোট জাকিরের স্কুলের বারান্দায় হাঁটার সৌভাগ্য হয়নি। অভাবের তাড়নায় ১৯৭৩ সালে শহরে এসে মইনুল হোসেনের চায়ের দোকানে কাজ নেন। এর এক বছর পর নগরীর জিলা স্কুল মোড়ের হোটেল মেহেরবানে কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। তখন এই দোকানটির মালিক ছিলেন নগরীর বাসিন্দা মইনুল হোসেন। ১৯৯৩ সালের দিকে তিনি হোটেল চালাতে না পেরে জাকির হোসেনকে দায়িত্ব দেন। এর পরের বছর টক-মিষ্টি জিলাপি তৈরি করেন জাকির।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সময়ের ব্যবধানে শহরজুড়ে বহু জিলাপির দোকান গড়ে উঠেছে। রমজান এলে বিভিন্ন জমকালো রেস্তোরাঁসহ অলিগলিতে ইফতারসামগ্রী বিক্রি করা হয়। কিন্তু সেটি জাকির হোসেনের তৈরি টক-মিষ্টি জিলাপির সঙ্গে কেউ টেক্কা দিতে পারে না। ফলে এখনো দেদারসে বিক্রি হচ্ছে ঐতিহ্যের এই জিলাপি।
জিলাপি কিনতে আসা মাহফুজ বলেন, ২০ থেকে ২৫ বছর যাবত এই জিলাপি কিনে খাচ্ছি। অন্য সব জিলাপি থেকে এ জিলাপির স্বাদ আলাদা। জিলাপি চিবোতে শুরু করলেই পাওয়া যায় মচমচে, রসালো, টক-মিষ্টি একটা স্বাদ। যা খুবই ভালো লাগে। ফলে রমজান এলে এই দোকান থেকে জিলাপি নিয়ে যাই। পরিবারের সবাই একসঙ্গে ইফতারে মজা করে খাওয়া হয়।