বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির আনীত অসদাচরণ ও নৈতিক স্খলণের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. আবু সালেহ সেকেন্দারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়, জনাব আবু সালেহ সেকান্দর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির আনীত অসদাচরণ ও নৈতিক স্খলণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ১২ ধারার আলোকে এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ এর ধারা ১১(১০) মোতাবেক সিন্ডিকেটে রিপোর্ট সাপেক্ষে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। এই আদেশ ৬ নভেম্বর হতে কার্যকর হবে।
জানা যায়, ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতার পরেও আওয়ামী লীগের পতনের পর ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তকে বুদ্ধিবৃত্তিক ভুল’ আখ্যায়িত করে কলাম লেখা ও ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সে প্রেক্ষিতে গত সোমবার তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা এবং তার বহিষ্কার দাবিতে গতকাল (মঙ্গলবার) মানববন্ধন ও বিভাগে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ হওয়া মেনে না নিতে পেরে গত ২৬ অক্টোবর একটা অনলাইনে পোর্টালের কলামে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘ যে আইনের ধারায় ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করেছে তা বেশ হাস্যকর ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়েছে। আল-কায়েদা বা আইএস নিষিদ্ধ করা আর ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা এক বিষয় নয়। দলীয়ভাবে ছাত্রলীগ আল-কায়েদা বা আইএসয়ের মতো ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমকে উৎসাহীত করেনি। তাহলে আল-কায়েদা ও আইএসের মতো একই আইনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করলে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হবে না এটাই স্বাভাবিক।’ এর পরেই ফুঁসে উঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এরুপ অবস্থান দেখে ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে তার কলামটি। তবে আরেকটি ওয়েবসাইটে তার একই কলাম পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও নারী কেলেঙ্কারি, থিসিস পেপার জালিয়াতি ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় আবু সালেহ সেকেন্দারকে। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে একটি তদন্ত কমিটি চলমান ছিল। তবে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এতোদিন পর্যন্ত বেতন ভাতা নিয়ে আসছিলেন তিনি।