আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা–সংক্ষেপে একে ‘এআই’ বলে ডাকা হচ্ছে। ২০২২ সালের শেষদিকে চ্যাটজিপিটির আবির্ভাবের পর থেকেই এআই নিয়ে জোর আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। এআই মানুষের চাকরি খেয়ে ফেলবে, অনেক মানুষ বেকার হবে–এমন শঙ্কার কথা শোনা যাচ্ছে। আবার এর বিপরীতে নানা সম্ভাবনার কথাও অপ্রতুল নয়। তবে আতঙ্ক যেন একটু বেশিই। কারণ, মানুষ নিজের রুটি-রুজি হারানোর শঙ্কায় ভুগছে।
কাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা চলছে এখন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কাজে এখন এআই টুলসের ব্যবহার হচ্ছে। এবং এই ব্যবহারের হার ক্রমশ বাড়ছে। পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট স্ট্যাটিস্টার গবেষণা বলছে, গত ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে এআই টুল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২৫ কোটি ছাড়িয়েছে। ২০২০ সালে এই সংখ্যাটি স্রেফ অর্ধেক ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ ব্যবহারকারীর এই সংখ্যাটি ৭০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে এআই টুলসের ব্যবহারের হার কতটা ঊর্ধ্বমুখী। অন্যান্য খাতের মধ্যে সংবাদমাধ্যমে এআই-এর প্রভাব নিয়েও আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। পৃথিবীর কিছু কিছু দেশের সংবাদমাধ্যমে, বিশেষ করে উন্নত দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো এরই মধ্যে বার্তাকক্ষে এআই-এর ব্যবহার নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। তবে অন্য যেকোনো সৃজনশীল কাজের তুলনায় সংবাদমাধ্যমে এআই-এর ব্যবহার নিয়ে দোলাচল ব্যাপক। তা সত্ত্বেও বিশ্বের নিউজ মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি অন্তত একটি ব্যাপারে একমত যে, সংবাদমাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার রোখা সম্ভব না। এর ব্যবহার হবেই এবং নানামাত্রিকই হবে। এখন তার নিয়ন্ত্রণ কীভাবে করলে সংবাদমাধ্যমের নৈতিক অধঃপতন হবে না–সেটিই মূল আলোচ্য বিষয়।
সারা বিশ্বের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম নয়। এআই-এর প্রভাব এ দেশেও পড়বে এবং অন্য সব খাতের মতো সংবাদমাধ্যমও এর আওতাভুক্ত হবে। প্রশ্ন হলো, এর জন্য আদৌ কি আমাদের সংবাদমাধ্যমগুলো প্রস্তুত? আমাদের দেশের সাংবাদিকেরাও কি প্রস্তুত?