সিজারিয়ান সেকশন অপারেশন এর সময় ওটি রুমে গাইনী এন্ড অবস্ট্রেটিক্স ও এনাসথেটিস্ট ডাক্তারের সাথে সাথে একজন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞের উপস্থিতি এবং নবজাতকের যে কোনো বিপদে উক্ত নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞের ভূমিকা সেখানে অপরিসীম।
আজ জরুরী ভিত্তিতে ফোন পেয়ে দৌড়ে গেলাম ওটিতে। গিয়ে দেখি অপারেশনের শেষ পর্যায়ে একটা নবজাতক শিশু জন্মের পর পর স্বাস প্রশ্বাস নিচ্ছে না, নবজাতক শিশুটি চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। আমি তৎক্ষণাৎ স্টেথোস্কোপ বুকে দিয়ে দেখি হার্টবিট (হৃদস্পন্দন) ও রেসপিরেশন (শ্বাস-প্রশ্বাস ) নেই। উপায়ান্তর না দেখে দ্রুত মাউথ টু মাউথ (আমার মুখ দিয়ে নবজাতকের মুখে শ্বাস দেয়ার প্রক্রিয়া) ব্রিদিং সাথে সিপিআর (বুকের নির্দিষ্ট স্থানে থেমে থাকা হৃদপিন্ডকে সচল হতে হৃদপিন্ডকে সংকেত প্রদান করা) দিয়ে নবজাতকের নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার প্রানান্তকর চেষ্টা করি। পরম করুনাময় অতি দয়ালু ঈশ্বর নবজাতকের প্রাণটি ফিরিয়ে দিলেন। আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানালাম।
১৫ মিনিট অবজারভেশন শেষে এইমাত্র আমি নবজাতক শিশুটির বুকে আবার স্টেথস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করে দেখলাম নবজাতক শিশুটির হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং হাত-পা ও দেহের নড়াচড়া স্বাভাবিক ভাবেই আছে। নবজাতক শিশুটি এবং নবজাতক শিশুটির পরিবার অনেক অনেক বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেলেন। ভবিষ্যতে সেরিব্রাল পালসিতে (একধরনের মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ ও অক্সিজেনের অভাব জনিত থেকে সৃষ্ট বিকলাঙ্গতা রোগ) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পেয়ে গেলো। আমি পরম করুনাময় অতি দয়ালু ঈশ্বরকে পুনরায় ধন্যবাদ জানালাম। পরম করুনাময় অতি দয়ালু ঈশ্বর আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝদান করার শক্তি দিন।
ডা : মানিক মজুমদারের ফেইজবুক থেকে নেয়া ।